বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে ‘মামাবাড়ির আবদার’ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা বলছেন খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে নির্বাচনে যাবেন না। এটা কি মামাবাড়ির আবদার? মুক্ত করার পথ কী? একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে মুক্ত করতে হলে আইনি প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই। আন্দোলন করে কি সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্ত করা যায়?’
বিএনপির উদ্দেশে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাইলে আইনি ব্যবস্থায় যান, হাইকোর্টে যান, সুপ্রিম কোর্টে যান। এতে আমাদের কী করার আছে? খেলার মাঠে আমরা দুর্বল টিম নিয়ে কেন খেলতে যাব? সে জন্য আমরা চাই উনাদের (বিএনপি) নেত্রী এসে নির্বাচন করুক।’
আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওর সরকারি কলেজ মাঠে জেলা পরিষদ আয়োজিত জনপ্রতিনিধি ও জনতার সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি উপজেলা সদরে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত জেলা পরিষদ টাওয়ার এবং ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলায় কয়েকটি উন্নয়নকাজের উদ্বোধন করেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দিনের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা প্রশাসক নাজমুস সাদাত, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা, জেলা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল ঘোষণা হলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচন হবে। এটাই সংবিধানের নিয়ম, পাঁচ বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও চাই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে নির্বাচনে আসুক। তবে তাঁকে মুক্ত করার ক্ষমতা আওয়ামী লীগ এবং সরকারের নেই। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাঁকে মুক্ত করতে হবে।’
বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নেই মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জনগণের ভয় আওয়ামী লীগকে দেখাবেন না। জনগণের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের জন্ম। ক্যান্টনমেন্টে বন্দুকের নলের মুখে বিএনপির জন্ম। এ কারণে আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁরা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি।
চেয়ার ছোড়াছুড়ি
সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় মানিকগঞ্জ-১ আসনের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুস সালাম বক্তব্য দেওয়ার সময় সভাপতি গোলাম মহীউদ্দিন তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেন। বর্তমান সাংসদ নাঈমুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গোলাম মহীউদ্দিন একপর্যায়ে আবদুস সালামের বক্তব্য থামাতে ধমক দিলে তাঁর (আবদুস সালাম) কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ সময় তাঁরা মঞ্চের সামনে চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এতে নাঈমুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বক্তব্যে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে এ রকম ঘটনা হয়েই থাকে। এটা দোষের কিছু না।