ভোটার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন প্রায় ৩০ লাখ নতুন ভোটার। ইতিমধ্যে চলতি বছরের ভোটার তালিকা হালনাগাদে তারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। আজ রবিবার খসড়া এই তালিকা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম এই খসড়া প্রকাশ করবেন।
গত ২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশ জুড়ে চার ধাপে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ চলে। নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায় থেকে একীভূত করে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে বিষয়টি উঠে আসে। এর আগে গত ২ জানুয়ারি ঐ খসড়া প্রকাশের দিন নির্ধারিত থাকলেও গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনসহ নানা কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার খসড়া হিসাবে দেশে ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৮৪ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ প্রায় ৫ কোটি ২৮ লাখ এবং নারী প্রায় ৪ কোটি ৯৩ লাখ। এছাড়া আছেন দুই সহস্রাধিক ট্রান্সজেন্ডার নাগরিকও। এরপর ভোটারদের দাবি ও আপত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৫-১৭ বছর বয়সি এবং আগামী ভোটারযোগ্য বাদ পড়া মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন, যা লক্ষ্যমাত্রা বিদ্যমান ভোটারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ৮৬ লাখের বেশি। এর মধ্যে মৃত ভোটারের সংখ্য প্রায় ২০ লাখ। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২ মার্চ দেশের মোট ভোটার ছিলেন ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়া চলমান থাকায় বর্তমানে ভোটার আরো কয়েক লাখ বেশি।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা বিধিমালা অনুযায়ী ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিধান আছে। ঐ বিধান অনুযায়ী প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। খসড়া তালিকায় আসা আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় ২ মার্চ। তবে এবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ পিছিয়ে গেলেও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময় অপরিবর্তিত থাকবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতের মতো এবারও আগামী নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত তরুণ ও নবীন ভোটাররাই বড় ফ্যাক্টর হতে পারেন। নির্বাচন কমিশনের হিসাবমতে, দেশের প্রায় ২ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৬১ জন ভোটারের বয়সই ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে, যা মোট ভোটারের ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৪১ লাখ তরুণ এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবেন, যারা দেশের মোট ভোটারের ৪ ভাগের ১ ভাগ। এ কারণে তারাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে গত ১৪ বছরে ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ৭২ লাখ ৫২ হাজার ৮১৫ জন, যা মোট ভোটারের ৩২.৭৭ শতাংশ এবং তাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৩ বছরের মধ্যে।