Ajker Digonto
সোমবার , ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ | ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. অর্থনীতি
  4. আইন- আদালত
  5. আইন-আদালত
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আলোচিত মামলা
  8. খুলনা
  9. খেলা
  10. খেলাধুলা
  11. চট্টগ্রাম
  12. চট্টগ্রাম বিভাগ
  13. জাতীয়
  14. ঢাকা
  15. তথ্য প্রযুক্তি

ভাইকে মন্ত্রী বানাতে এরশাদের যত কৌশল

প্রতিবেদক
Staff Reporter
ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৬ ৬:৫৩ অপরাহ্ণ

জাতীয় পার্টিতে (জাপা) চলমান গৃহদাহের অবসান দেখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কলহের মিটমাট করে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুক জাতীয় পার্টি -এটি দেখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। তাই ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের অপর একটি অংশ মনে করেন, জাতীয় পার্টির চলমান গৃহদাহ এক অর্থে আওয়ামী লীগ ও সরকারের জন্য সুবিধা তৈরি করেছে। জাতীয় পার্টির ভেতরে চলমান অস্থিরতায় রাজনীতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বিএনপি। এটি সরকারের জন্য সুখবর।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, জাতীয় পার্টির মধ্যে চলমান গৃহদাহ মূলত মন্ত্রী বানানো নিয়ে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ চান তার দলের দুজনকে মন্ত্রী বানাতে। এর একজন হলেন তার ছোটভাই জিএম কাদের, অপরজন হলেন রুহুল আমিন হাওলাদার। জাফরউল্যাহ আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে রওশন এরশাদ বলছেন- জাতীয় পার্টির কাউকে মন্ত্রী বানাতে হলে আমি লিডার অব অপজিশন যাকে মনোনীত করবো তাকেই মন্ত্রী বানাতে হবে। তিনি বলেন, মূলত এ নিয়েই জাতীয় পার্টিতে গৃহদাহ চলছে। এর বাইরে কিছুই নয়।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ চায় জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকুক। শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে কাজ করুক। তিনি বলেন, এখন শুনতে পাই জাপার ভেতরে গৃহদাহের কারণ ভিন্ন। তিনি বলেন, তা যদি সত্যি হয়, এটি দুঃখজনক ঘটনা। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অন্তত চারজন দায়িত্বশীল নেতার বক্তব্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছেন। তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন অভ্যন্তরীণ কলহ দূর করে দলকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাওয়ার। সূত্রগুলো আরও জানায়, জাতীয় পার্টির মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের এ পর্যায়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের বৈঠকে অভ্যন্তরীণ কলহ দূর করতে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নেতৃত্ব নিয়ে সৃষ্ট কলহ এবং সরকারের মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টি থাকবে কি থাকবে না সেই সিদ্ধান্তের চেয়ে বড় বিষয় দলকে সংগঠিত করা। তাই দলের প্রতি, সংগঠনের প্রতি নজর দিতে শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়েছেন বলে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদেরকে বলেছেন, সময়-সুযোগ পেয়েছেন নিজেদের বিরোধী দলের আসনে বসানোর। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে দাঁড় করান। এতে দলের ও সংগঠনের লাভ হবে। সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, বৈষয়িক বিষয়গুলো আপাতত দূরে ঠেলে রেখে দলের প্রতি নজর দিন। দল টিকে থাকলে মর্যাদা পাবেন, সম্মান পাবেন।

এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে দলের সদস্যদের প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিলেও সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে সরবে না জাতীয় পার্টি-এ ব্যাপারে নিশ্চিত ক্ষমতাসীনরা। এ বিষয় নিয়ে এরশাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য কৌশলের অংশ বলে মনে করেন সরকারি দলের দায়িত্বশীল নেতারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা থেকে জাতীয় পার্টি পদত্যাগ করবে না। বরং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় অন্তত জাতীয় পার্টির আরও দুজনকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় এরশাদ। একজন হলো তারই ছোটভাই সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের। অপরজন রুহুল আমিন হাওলাদার। দুজন না পারলে অন্তত একজন জিএম কাদেরকে যাতে মন্ত্রী বানানো যায় সেই জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির একাধিক নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ মনে করেন, কিছু দিনের মধ্যে সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল আসবে তাই তার আগে দর কষাকষি করার অংশ হিসেবে এটি করা হচ্ছে।

সূত্রগুলো জানায়, সরকারের সঙ্গে অনেক আগ থেকেই ভাই জিএম কাদেরকে নিয়ে দর কষাকষি শুরু করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে জিএম কাদেরের আচরণ আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হতাশ করেছে। তাই জিএম কাদেরকে মন্ত্রী বানাতে আপত্তি রয়েছে সরকারি দলের শীর্ষ নেতাদের।

বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর দুজন নেতা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পুরো ৫ বছর মন্ত্রী ছিলেন জিএম কাদের। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এরশাদ ও জিএম কাদেরের নির্বাচনবিরোধী অবস্থান এবং ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে নানা সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চরম হতাশ করেছেন। জিএম কাদেরের আচরণে রীতিমতো হতাশ হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তাই নির্বাচনের পরে সরকার গঠনের সময়ে জিএম কাদেরকে মন্ত্রী বানানোর জন্য এরশাদের জোর অনুরোধ থাকলেও প্রধানমন্ত্রী তা রক্ষা করেননি।

সূত্র জানায়, এরশাদের ভাইকে মন্ত্রী বানানোর জন্য তার কৌশলের অংশ হিসেবে প্রথমে জাতীয় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদে জায়গা করে দেন, যাতে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যায়। এ বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে যায়। জাতীয় পার্টির ভেতরে তৈরি হয় গৃহদাহ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, অন্য সময়ে এগুলো নিয়ে কথা বলবো।

সর্বশেষ - বিনোদন