মাদারীপুর প্রতিনিধি
আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের গ্রুপ ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী শামসুদ্দিন মিয়ার গ্রুপের বিরোধের জের ধরে গতকাল রাজৈর উপজেলাতে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
আমাদের মাদারীপুর প্রতিনিধির মাধ্যমে জানা যায় যে রাজৈর বাজারে এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়ার নির্বাচনী সভা চলাকালে সেখানে অতর্কিতে শাহজাহান খানের গ্রুপ কালি খানের নেতৃত্বে লাঠি সোটা, দা-কিরিচ ইত্যাদি নিয়ে উক্ত সভাতে হামলা চালায়। হামলার সাথে সাথে এলাকাতে আতংক ছড়িয়ে পড়লে সকল দোকান পাট বন্ধ হয়ে পড়ে। এই সময় শাহজাহান খা
নের গ্রুপ এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকদের এলোপাথারি পেটাতে থাকে ও কোপাতে থাকে। তারা সভার মঞ্চের মাইক ভেঙে ফেলে এবং এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়া, এডভোকেট কাদের আলী, এডভোকেট হাসান ফিরোজ, রাজৈর দক্ষিন আওয়ামীলীগ নেতা মবিন হোসেন সহ অনেককেই লাঞ্চিত করেন। এই হামলায় এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়া, কাদের আলী ও হাসান ফিরোজ গুরুতর আহত হন।
কালু খানের নেতৃত্বে এই হামলার ফলে অন্তত পক্ষে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং অনেক নেতাকর্মীরা জখম হয়েছেন বলে জানা যায়। এই সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা এলাকাবাসীকে হতভম্ব করে দেয়। ঘটনার কিছু পরে পুলিশের প্রায় ১৫ জনের একটি দল এসে শাহজাহান খানের গ্রুপকে নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করে। এ সময় কালু খান উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, “এই এলাকায় নেতা একজনই। তিনি হলেন শাহজাহান খান। তিনি ছাড়া বাকী যারা তার বিরোধীতা করে, তারা সবাই জামাত শিবিরের লোক”
ঘটনার পর পর এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়া, এডভোকেট কাদের আলী, এডভোকেট হাসান ফিরোজ দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়, বর্তমানে তাঁদের অবস্থা আশংকা মুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে বেশ দীর্ঘদিন ধরেই মাদারীপুর আওয়ামী আইনিজীবি পরিষদের জনপ্রিয় নেতা এডভোকেট শামসুদ্দিন মিয়া ও আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান খানের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছে। আসন্ন নির্বাচনে শামসুদ্দিন মিয়া নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিলে শাহজাহান খান ব্যাপারটিকে সহজ ভাবে নেন নি বলেই এলাকা সূত্রে জানা যায় আর তখন থেকেই এই দুই গ্রুপের দ্বন্দে রাজৈর উপজেলা অস্থির এক রাজনৈতিক ভূমিতে পরিণত হয়।
এই হামলার ব্যাপারে স্থানীয় থানাতে যোগাযোগ করা হলে থানায় কর্তব্যরত অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান যে, তাঁরা একটি রাজনৈতিক গোলমালের ঘটনা শুনেছেন কিন্তু এই ব্যাপারে কেউ এখনো অভিযোগ করেনি বলে তিনি জানান। তবে কেন ঘটনাটি ঘটেছে এই বিষয়টি তাঁরা ক্ষতিয়ে দেখছেন।