প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য গুম, খুন, জেল-জুলুম, আহত ও নির্যাতিত হয়েও অব্যহত লড়াই চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে তার বিজয় অর্জিত হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্বে জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটি রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করছে।
শুক্রবার (০৬ জুন) ভার্চুয়ালি দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি সভায় এসব কথা বলা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের বিষয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থায়ী কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণ পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতভাবে এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে যে, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রদত্ত তাঁর বক্তব্য প্রসঙ্গকে অতিক্রম করে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পরিনত হয়েছে। এই দীর্ঘ ভাষণে তিনি বন্দর, করিডোর ইত্যাদি এমন সব বিষয়ে অবতারনা করেছেন যা তাঁরই ভাষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩টি ‘ম্যান্ডেটের’ মধ্যে পড়েনা। ভাষণে তিনি শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করায় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে সময়সীমা প্রস্তাব করেছেন তা পর্যালোচনা করে সভা মনে করে যে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারনা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অধিকন্তু কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়,এমন কোন সুনির্দিষ্ট কারণ তাঁর ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সঙ্গতভাবেই শংকিত হতে পারে বলে সভা মনে করে।

 
                    














 
                                     
                                     
                                     
                                    






 
                                            
