দেশকে ডিজিটাল করণের পথে আরো একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) মোবাইল ফোন সেবার জন্য গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনের প্রস্তাবিত প্যাকেজ অনুমোদন করেছে বিটিআরসি। এখন থেকে কিছু কিছু জায়গায় মোবাইল গ্রাহকরা থ্রিজি সুবিধা পাবেন। তবে বাংলাদেশে থ্রিজি সেবার আড়ালে পাতা হয়েছে গভীর ফাঁদ। প্যাকেজগুলোর দাম এতো বেশি যে সেগুলো সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আর সবচেয়ে বেশি মূল্যে থ্রিজি সেবা প্রদানের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বহুল ব্যবহৃত গ্রামীণফোন।
অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ইন্টারনেটের দাম কমেনি বরং তুলনামূলকহারে আরো বেড়েছে৷ দ্রুতগতির সাশ্রয়ী ইন্টারনেট আসলে শুভংকরের ফাঁকি।
অভিযোগ আছে, থ্রিজি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এগোতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি টেলিটক। ঘন ঘন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে দুর্ভোগে থ্রিজি গ্রাহকরা। নেটওয়ার্ক লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন তারা। তবে সবকিছু মিলিয়ে টেলিটকেই স্বস্তির নি:শ্বাস খুঁজে ফিরছেন গ্রাহকরা।
অপারেটররা যে গতি প্রস্তাব করেছে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ন্যূনতম ৭০ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ ৫১২ কেবিপিএসের প্যাকেজে সর্বনিম্ন গড় গতি হতে হবে ৩৫৮ কেবিপিএস।
থ্রিজির বিভিন্ন প্যাকেজের জন্য যে মূল্যের অনুমোদন পেয়েছে অপারেটর সেটা সবোর্চ্চ সীমা। এই মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য গ্রাহকরা নিতে পারবে না। অপারেটর চাইলে তা মূল্য কমাতে পারবে।
তিনটি অপারেটরই ডাটা প্রবাহের গতি, ডাটার পরিমাণ ও মেয়াদ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
গ্রামীণ ফোনের সর্বনিম্ন গতির প্যাকেজ হচ্ছে ৫১২ কেবিপিএস (কিলোবিট পার সেকেন্ড)। সবচেয়ে কম ভলিউম ৫০ মেগাবাইট। গ্রামীণফোন সর্বোচ্চ ১ মেগাবাইট গতির প্যাকেজ দেবে।
প্যাকেজ ভেদে রবি আজিয়াটার সর্বনিম্ন গতি হবে ৫১২ কেবিপিএস। আর সর্বোচ্চ ৪ মেগাবাইট। এ অপারেটরের প্যাকেজের সর্বনিম্ন ভলিউম ২০০ মেগাবাইট। আর সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ গিগাবাইট।
বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন শুধু ১ মেগাবিট গতির প্যাকেজ দেবে। এ প্রতিষ্ঠানরে প্যাকেজের সর্বনিম্ন ভলিউম ১৫০ মেগাবাইট, আর সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২৪ গিগাবাইট।
অনুমোদিত প্যাকেজ অনুসারে ৫১২ কেবিপিএস স্পিডের ৫০ মেগাবাইটের মূল্য ৫০ টাকা, মেয়াদ ৫ দিন। ৮০০ কেবিপিএসের ১ গিগাবাইট (জিবি) প্যাকেজের মূল্য ৪৫০ টাকা, মেয়াদ ১৫ দিন। ১ মেগাবাইটের ১ জিবি পরিমাণ প্যাকেজের মূল্য ৬০০ টাকা, মেয়াদ ১৫ দিন। রবি আজিয়াটার ২০০ মেগাবাইট প্যাকেজের মূল্য ১০০ টাকা, মেয়াদ ৭ দিন। স্পিড লিমিট ৫১২ কেবিপিএস।
বাংলালিংকের সর্বনিম্ন ১৫০ মেগাবাইটের প্যাকেজের মূল্য ১৫০ টাকা, মেয়াদ ১৫ দিন।
বরাবরের মতো ধরাছোঁয়ার বাইরে গ্রামীণফোন
এখন পর্যন্ত যে তিনটি অপারেটর থ্রিজি প্যাকেজের অনুমোদন পেয়েছে তাদের মধ্যে গ্রামীণ ফোনের প্যাকেজের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। ইন্টারনেটের গতি ও ডাটার পরিমাণের ভিত্তিতে (ভলিউম) পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মাত্র একটি প্যাকেজ তিন অপারেটরই অফার করছে।
অন্য দুই অপারেটর এক মেগাবিট গতির এক গিগাবাইট ডাটার প্যাকেজ নেবে ৩০০ টাকা, যার মেয়াদ হবে মাত্র ১৫ দিন। একই গতি ও ডাটার জন্য গ্রামীণফোন নেবে ৬০০ টাকা। এরও মেয়াদ হবে ১৫ দিন। এভাবেই বেশি গ্রাহকের গ্রামীণ এক অর্থে প্রতারিত করছে গ্রাহককে।