Ajker Digonto
শুক্রবার , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. অর্থনীতি
  4. আইন- আদালত
  5. আইন-আদালত
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আলোচিত মামলা
  8. খুলনা
  9. খেলা
  10. খেলাধুলা
  11. চট্টগ্রাম
  12. চট্টগ্রাম বিভাগ
  13. জাতীয়
  14. ঢাকা
  15. তথ্য প্রযুক্তি

দেশের প্রথম রোবটিক্স স্কুল কুমিল্লায়

প্রতিবেদক
আজকের দিগন্ত ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

রোবট বিদ্যার স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছে কুমিল্লায়। নগরীর রাজবাড়ি কম্পাউন্ডে মাস দুয়েক আগে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে স্কুল অব রোবটিক্স। দেশের প্রথম রোবটিক্স এই স্কুলে ভর্তি ও ক্লাস করতে অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।

শিক্ষার্থীদের বয়সের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। যে কেউ পড়তে পারেন রোবটিক্স।

কম্পিউটারবিদ্যার শিক্ষকরা দেখাচ্ছেন কীভাবে প্রোগ্রামিং করতে হয়। মনোযোগ দিয়ে শিক্ষার্থীরা সেই পাঠদান শুনছেন। পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে ব্যবহারিকভাবেও দেখানো হচ্ছে কীভাবে রোবট তৈরি করতে হয়, রোবট দিয়ে কীভাবে প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে হবে। বিকেল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত সময় কেটে যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বর্তমানে স্কুলটিতে বিভিন্ন বয়সী দুই শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করেন। সপ্তাহে শুক্র, শনি ও মঙ্গলবার এই তিন দিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাঠদান হয়।

কুমিল্লা কালেক্টেরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে চলছে স্কুল অব রোবটিক্স। অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার তার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।

নার্গিস আক্তার জানান, গত ৩১ জুলাই ভার্চুয়ালি স্কুল অব রোবটিক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। সেদিন কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে জেলার বিভিন্ন সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথ ইস্ট, ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা শিক্ষার্থীরা এখানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত। তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এখানে ক্লাস করেন।’

কুমিল্লা স্কুল অব রোবটিক্সে এক ডজন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করেন। তাদের একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ব্যাচের আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ পারভেজ সবুজ। তিনি বলেন, ‘সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস। মাস তিনেকের পথচালায় দারুণ সাড়া পাচ্ছি। এখানে রোবটিক্সের ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ফ্রিল্যান্সিংও শেখানো হয়।’

স্কুল অব রোবটিক্সের আরেক শিক্ষক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করা নুরুল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানে চারটি বিষয়ে ক্লাস নেয়া হয়। বেসিক কম্পিউটার, প্রোগ্রামিং, ফ্রিল্যান্সিং ও রোবটিক্স। এই চার ধরনের ক্লাসে যারাই অংশগ্রহণ করছেন, তারা ভালো করছেন। এ ছাড়া যারা ফ্রিল্যান্সিং করছেন, তাদেরকে আইডি খুলে দেই। সেই আইডি ব্যবহার করে তারা এখনই উপার্জন করতে শুরু করেছেন।’

মাস তিনেকের পথ চালায় বেশ কিছু সাফল্য রয়েছে স্কুল অব রোবটিক্সের। কয়েকজন শিক্ষার্থী বেশ কয়েকটি ড্রোন তৈরি করেছেন। এ ছাড়া ডিজিটাল ডাস্টবিন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ডাস্টবিনের কাছে ময়লা নিয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঢাকনা খুলে যাবে। স্কুল-কলেজে এই ডিজিটাল ময়লার ঝুড়ি ব্যবহার করা যাবে।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নেভিগেশন ওয়াচ তৈরি করেছেন। শিক্ষার্থীরা এই ঘড়ি পরে থাকবেন। যদি স্কুল কলেজে আসা-যাওয়ার সময় কেউ তাদের বিরক্ত করে কিংবা কিডন্যাপ করার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা হাতে থাকা নেভিগেশন ওয়াচে চাপ দিলেই পরিবারের কাছে যন্ত্রটি জানিয়ে দেবে তাদের সন্তানরা বিপদে পড়েছেন। যন্ত্রটিই লোকেশন বলে দেবে।

শিক্ষকরা আশা করছেন তারা আগামী মাস তিনেকের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ রোবট তৈরি করতে পারবেন। অনেকগুলো প্রজেক্ট প্রায় শেষের পথে।

চতুর্থ শিল্পবিল্পবকে মাথায় রেখে শিক্ষার্থীরা যাতে সে অনুযায়ী নিজেদের যেন গড়ে তুলতে পারে, এমন ভাবনা প্রতিনিয়ত আন্দোলিত করে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানকে। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল অব রোবটিক্স।

কামরুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আগামীর দিনগুলো হবে প্রযুক্তিময়। যারা প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকবেন, তারা পিছিয়ে যাবেন। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতেই স্কুল অব রোবটিক্স তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ পড়ালেখার পাশাপাশি এই স্কুলে যে কেউ পড়াশোনা করতে পারবেন।

‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দানের জন্য সবাইকে বিজ্ঞান ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। তাই কুমিল্লা থেকেই এই শিক্ষা বিপ্লব শুরু করেছি। সে জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর জন্য কুমিল্লা ১৭ উপজেলায় ১৬৭টি প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৮৫টি ল্যাব স্থাপন কার্যক্রম চালু রয়েছে। পাশাপাশি এই ১৭ উপজেলায় অর্ধশত রোবটিক্স ক্লাব গঠন করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে এই কার্যক্রমের সুফল পাবে দেশ।’

সর্বশেষ - অন্যান্য