পোর্টাল বাংলাদেশ ডেস্কঃ
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন মালিক বলেছেন, আগামী ২৭ তারিখের পর থেকে সংসদের অধিবেশন অবৈধ হবে। সংবিধানের ১২৩(৩) এর বিধানে পাচঁ বছর শাসনকাল থেকে ৯০ দিন বাদ দেয়া হয়েছে, এ গ্যারান্টি দিয়েছে পঞ্চদশ সংশোধনী।
এক সাক্ষাৎকারে ড. তুহিন মালিক বলেন, ১২৩(৩) কে প্রোটেকশন দিয়েছে ৭২(১), যাতে শেষ ৯০ দিনে অধিবেশন না বসে সেটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেই হিসেবে ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ৯০ দিনের কাউন্ট ডাউন।
কারন ব্যখ্যা করে ড. তুহিন বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাস ৩১ দিনে। ফলে সংবিধান বলছে, ৯০ দিন কিন্তু জনগণ বলছে তিন মাস, সে প্রেক্ষাপটে ২৭ তারিখের পর সংসদে অধিবেশন হবে অবৈধ। তুহিন মালিক আরোও বলেন, সংসদে সর্বশেষ কার্য উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অবৈধ। তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীতে ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন। ৫৬(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন মন্ত্রীরা দায়িত্বে না নিবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত পুরো মন্ত্রীসভা বহাল থাকবে। তিনি বলেন, ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন সংসদ সদস্যরা না আসেন ততক্ষণ পর্যন্ত বর্তমান সংসদ বহাল থাকবে। তিনি বলেন, এ নিয়ে তর্কের কিছু নেই, এটাই এখন সংবিধান, এটাই বাস্তবতা। তিনি আরোও বলেন, ধরে নিলাম নির্বাচন হলো, সংসদ সদস্যরাও নির্বাচিত হলো, কিন্তু নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোন দিক নির্দেশনাও নাই।
তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সংবিধানের ১২৩(৩) (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ সরকার বৈধ। ১২৩(৩) এর (খ) তে বলা আছে, সংসদ ভাঙ্গার ৯০ দিন পর পরবর্তী নিবার্চন। সংবিধানের ৭২/৩ অনুযায়ী পুরা পাচঁ বছর সরকারে থাকবে আওয়ামী লীগ সেই হিসেবে ২৪ জানুয়ারী যদি সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হয় তবে ৯০ দিন মতে আগামী ২৪ মে এপ্রিল পর্যন্ত সরকারের মেয়াদ বাড়বে। ড. তুহিন মালিক বলেন, ১২৩/৪ অনুচ্ছেদ দেশে যদি দৈব-দুর্বিপাক হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, দেশে কোন নির্বাচনী পরিবেশ নাই, সেক্ষেত্রে সরকারের মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়তে পারে। কোন কারনে নির্বাচনের কোন বিষয় নিয়ে আদালতে গেলে এবং সিডিউল ডিক্লিয়ার করার পর কোন কারনে বিজ্ঞ আদালত যদি স্থগিতাদেশ দেয় সেক্ষেত্রে অনিদর্ষ্টকালের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সরকার বহাল থাকবে।
সংবিধান প্রধানমন্ত্রীকে এমনটিই ক্ষমতা দিয়েছে। তিনি বলেন, যেমনটি হয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, ডিসেম্বর ২০১১ তে ডিসিসি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা আজো হয়নি। বিধান মতে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। ২০০৭ এ মেয়াদ শেষ হয়েছে ডিসিসি’র কিন্তু ছয় বছর দরে কোন নির্বাচন হচ্ছে না। যদি কোন ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হয়, সেক্ষেত্রে সংবিধান মোতাবেক স্পীকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। সংবিধান পরিবর্তন না করে দুনেত্রীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তুহিন মালিক বলেছে, ৫৬(৪) এ বলা আছে, কোন কারনে সংসদ ভেঙ্গে গেলে আগের সংসদ থেকে যে কোন সদস্যকে মন্ত্রী/প্রধানমন্ত্রী বানানো যাবে। ৫৬(৪) এর তিন অনুচ্ছেদ এ গ্যারান্টি দিয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তুহিন মালিক বলেন, সবার সাথে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্দলীয় ১০ জনকে উপ-নির্বাচনে বিজয় করে নিয়ে এসে সংসদ ভাঙ্গার পর মন্ত্রী/প্রধানমন্ত্রী করে নতুন সরকার পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে পারে। তুহিন মালিক বলেন, এমনটি হলে সংবিধান পরিবর্তনের দরকার নেই, আমদের দু’নেত্রীর সম্মান, অবস্থান, মর্যাদা বহাল থাকবে। কারোরই পরাজয় হবে না, মর্যাদার দিক দিয়ে কেউই কারো কাছে ছোট হবেন না। শংকা প্রকাশ করে তুহিন মালিক বলেন, আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানে ব্যর্থ হলে সংঘাত অনিবার্য, এতে গণতন্ত্র ব্যহত হবে, তৃতীয় শক্তির কাছে ক্ষমতা চলে যেতে পারে |