একাত্তরে বাঙালির ওপর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যদের যুদ্ধাপরাধের তথ্য সংগ্রহে কাজ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধেরও বিচার দাবির মধ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
“যারা পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচারের আওতায় আনা দেশবাসীর প্রত্যাশা,” বলেছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান আব্দুল হান্নান খান।
তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মতিউর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই কমিটি এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
যুদ্ধাপরাধের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ইতোপূর্বে যে সব মামলার তদন্ত করেছি, সেগুলোতে কিছু কিছু পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে।
“এছাড়া ১৯৭২ সালের দালাল আইনের মামলাতেও পাকিস্তানি আর্মির অনেকের নাম ও পদবি উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।”
বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন আব্দুল হান্নান। মৌলভীবাজারে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হওয়ায় ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিদেশীয় চুক্তির আওতায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক ১৯৫ সেনা সদস্যকে নিজ দেশে বিচারের মুখোমুখি করার শর্তে ফেরত নেয় পাকিস্তান। এরপর ৪৪ বছর পার হলেও তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি দেশটি।
বাংলাদেশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে চলার মধ্যে সম্প্রতি সেই ১৯৫ জনের বিচারের দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উঠে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন এই দাবি তোলে।
সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যেও কেউ কেউ ১৯৫ জনের বিচারের দাবিতে কথা বলেন।
গত নভেম্বরে যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তান উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়ায় এবং একাত্তরের গণহত্যার দায় অস্বীকার করায় সেই ১৯৫ জনের বিচারের দাবি নতুন করে আলোচনায় আসে।
আগামী ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই ১৯৫ জনের প্রতীকী বিচার করার ঘোষণা দিয়েছে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার’ নামের একটি সংগঠন।