গত ১৬-ই এপ্রিল সোমবার ঢাকা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট-১, আমলী আদালতে ৩৬ জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি ধর্ম অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী মো শামীম হেফাজত ইসলামের একজন কর্মী বলে জানা যায়। এইদিন সোমবার এই মামলাকে ঘিরে আদালতে তীব্র উত্তেজনা দেখা যায় এবং হেফাজতের শত শত কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গন ঘিরে রাখে। মামলা দায়েরের পর তারা নারায়ে তাকবীর আল্লহ হু আকবর বলে স্লগান দিতে দিতে দিতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের দিকে অগ্রসর হয়। এই সময় এই মিছিল থেকে কিছু রিকশা ও গাড়ি ভাংচুর করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায় মামলার বাদী মোঃ শামীম “এথিস্ট ইন বাংলাদেশ” নামক একটি ইসলাম বিদ্বেষী ম্যগাজিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পেনাল কোডের ২৯৫ ধারাতে ধর্ম অবমাননার মামলা দাখিল করেন। এই মামলায় মূল আসামী নাজমুল হোসেন ওরফে ঘাতক নাম্নী এক লেখককে মূল আসামী দেখানো হয়। উল্লেখ্য এই ঘাতক নাম্নী ব্লগারের বিরুদ্ধে অনেক আগের থেকেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ রয়েছে এবং তার নাম বেশ কিছু বছর আগে আনসার উল্লাহ বাংলা টিম নামক একটি ইসলামী দলের ৮৪ জনের হিট লিস্টের তালিকাতেও ছিলো।
আরো জানা যায় যে এই উক্ত ম্যাগাজিনটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শান্তি প্রিয় ইসলামী জনতার আবেগের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কদর্য ভাষায় ইসলামকে আক্রমণ করে লেখালেখি চালিয়ে আসছে। আরিফুর রহমান সম্পাদিত ও সেক্যুলার পাব্লিশার্স কর্তৃক প্রকাশিত এই ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে ইসলাম বিদ্বেষের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এই মামলাতে সর্বমোট ৩৫ জন ব্যাক্তিকে আসামী করা হয় যারা হচ্ছেন মূল আসামী নাজমুল হোসেন ওরফে ঘাতক। বাকিরা হলেন সুরঞ্জয় সরকার, পিনাকী দেব অপু , শাহাদাত হোসেন, প্রকাশক আরিফুর রহমান, সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন শাওন ,মোঃ তোফায়েল হোসেন, আদনান সাকিব, রুজভেল্ট হালদার, আবু হানিফ, সৈয়দ মোহাম্মদ সজীব আবেদ , এম ডি মেহেদী হাসান, সৈয়দ সানভী অনিক হোসেন ,এনায়েতুল হুদা, নাঈমুল ইসলাম, এম ডি আব্দুল্লাহ আল হাসান, কাজী মোঃ সাইফুল হক ,আশেফ আবরার টিটু ,হুসেইন মোহাম্মদ পারভেজ ,রিয়ানা ট্রিনা , মিল্টন কুমার দে, তামজিদ হোসেন, আবু তাহের মোঃ মুস্তাফা, সিদ্দিকুর রহমান, শারমিন খান,সৈয়দ সামুন আলী, তাহেরা সুলতানা, যুবায়ের আহমেদ, আব্দুল আহাদ শান্ত, শিপন আহমেদ , সুজন চন্দ্র দেব , ফয়সাল হোসেন অনিক, সাইফুল ইসলাম , ইয়াজ কাওসার এবং কামরুন নাহার শাহানা।
এই ব্যাপারে বাদী মোঃ শামীমের সাথে কথা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এই এথিস্ট ইন বাংলাদেশ ম্যাগাজিনটি ইসলামের শত্রু। এইখাঙ্কার লেখকেরা ক্রমাগতভাবে প্রতিদিন ইসলামকে নানাভাবে অপমান ও অপদস্ত করে যায় কিন্তু সরকার কিংবা তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় একটি কথাও বলে না”
তিনি আরো বলেন, “আল্লাহর জমিনে কোনো নাস্তিকের বাচ্চার ঠাঁই হবে না। আর নাজমুল হোসেন ওরফে ঘাতককে দেশে নিয়ে এসে প্রকাশ্যে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে শিরচ্ছেদ করতে হবে”
বাংলাদেশে তো প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদের আইন নেই বা পদ্ধতি নেই তাহলে তিনি কেন এমন দাবী করছেন, এই প্রশ্নের জবাবে জনাব শামীম বলেন, ৯৮% মুসলমানের দেশে শরীয়া আইন করতে হবে, তা না হলে এই দেশে কোন সরকার টিকে থাকবে না।
এই ব্যাপারে মূল আসামীদের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। এদিকে এই ঘটনার রেশ ধরে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ছিলো অত্যন্ত সরব। সেখানে নানাবিধ মিসগ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এই ব্যাপারে কোনো রকমের মন্তব্য করা হবে না বলে আমাদের প্রতিবেদককে জানান।
(ছবিতে আসামী নাজমুল হোসেন ওরফে ঘাতককে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি তার ব্লগ www.ghatok.wordpress.com থেকে সংগৃহীত)