নির্বাচনকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত এবং সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র দেশে ঢুকাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। এছাড়া বৈধ অস্ত্র দিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরও খুঁজে বের করছে তারা।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযানে উদ্ধার কিংবা জব্দ হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে গোয়েন্দারা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্র আসার তথ্য পায়। এভাবে অস্ত্র আনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ চলমান রেখেছে গোয়েন্দারা। কাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় সীমান্ত পার হয়ে অস্ত্রগুলো দেশে ঢুকছে সে বিষয়েও কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে।
সবশেষ রবিবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানে অবৈধ অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় একটি প্রাইভেটকারসহ দুটি অস্ত্র এবং ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। চক্রটির বিষয়ে গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আহমদউল্লাহ ওরফে সুবেলের ছত্রছায়ায় সীমান্ত পার হয়ে অস্ত্রগুলো ঢাকায় এসেছিল। সীমান্ত পার করে অবৈধ অস্ত্র রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোকজনের কাছে বিক্রির তথ্য পায় গোয়েন্দারা। তবে সুবেলকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার চারজন গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সুবেল অস্ত্রগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দিতো। এরই মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র সরবরাহ করেছে তারা। সুবেলকে গ্রেফতার করা গেলে অনেক তথ্য জানা যাবে এবং অবৈধ অস্ত্র দেশে কীভাবে ঢুকছে, কাদের ছত্রছায়ায় ঢুকছে— সেসব বিষয় সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অপতৎপরতা মনে করছে গোয়েন্দা পুলিশ। কারা এসব অস্ত্রের ক্রেতা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সাথে আর কারা জড়িত খতিয়ে দেখে তাদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বা অবৈধ অস্ত্র সীমান্ত পার করে দেশে ঢুকাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কাজ করছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৮টি বিভাগে ৮টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের টিম রয়েছে। তথ্য পাওয়ামাত্রই অভিযান পরিচালনা করছে কর্মকর্তারা। শুধু রাজধানী নয় আশপাশ এলাকাগুলোতেও তদারকি করা হচ্ছে।
যারা এসব অবৈধ অস্ত্র কিনবে বা বিক্রি করবে সবাই সমান অপরাধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, জড়িতদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কারা অস্ত্র অর্ডার করেছে বা কাদের কাছে অস্ত্র যাচ্ছে— সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনেকে বৈধ অস্ত্র দিয়ে মানুষকে হুমকি ও ভয়-ভীতির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।