বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ১২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী ড. আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি জানিয়েছেন- খুলনা, বরিশাল, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটাব্রের শাখা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে সভাপতিত্ব করছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদকে (বিসিএসআইআর) একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স ও সেন্টার ফর টেকনোলজি ট্রান্সফার অ্যান্ড ইনোভেশন হিসেবে রূপান্তর করা হচ্ছে। এছাড়া পারমানবিক নিরাপত্তার পাশাপাশি পারমানবিক বিকিরণ হতো সুরক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অবকাঠামো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রীর ভাষ্য, ‘বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষে আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণাধমী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান শিক্ষার আগ্রহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে চলমান বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার কলেবর বৃদ্ধি করে উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করেছি।’
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম বাজেট এটি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটির বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরপর মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবিত বাজেটে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এবারের বাজেটে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ও বৈদেশিক অনুদান ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। কর ব্যতিত রাজস্ব প্রাপ্তি ৩৩ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান ৪ হাজার ৫১ কোটি টাকা। এডিপি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা ও ঘাটতি ১ লাখ ২১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। এদিকে নিট ঋণ ধরা হয়েছে ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা।
বাজেটে জিডিপি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে।
নতুন বাজেটের আকার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৬৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বেশি। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় এর আকার ৯৩ হাজার ৭৮ কোটি টাকা বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা, সংশোধিত বাজেটের আকার তিন লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে ঘাটতি মেটাতে অর্থমন্ত্রী বৈদেশিক উৎস থেকে মোট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন ৬০ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১০ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ খরচ হবে। সরকারের নিট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা। ঘাটতির বাকি ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা নেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। বাকি ৩ হাজার কোটি টাকা আসবে অন্যান্য উৎস থেকে।