বাংলাদেশ যে পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল উৎসব করতে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিলো ম্যাচের আগেই। বাংলাদেশের মেয়েদের কন্ঠে ছিলো এই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয়ের প্রত্যয়। অধিনায়ক সাবিনার হ্যাটট্রিকে পাকিস্তানের জালে গুনে গুনে ৬ গোল দিয়েই নিজেদের মুখের কথার প্রমান রাখলেন মেয়েরা। ৬-০ গোলের এই জয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালের পথ অনেকটা সুগম হয়ে গেলো লাল-সবুজের জার্সিধারীদের।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই আধিপত্য ধরে রেখে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। সাবিনার হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি বাংলাদেশের হয়ে একটি করে গোল করেছেন মনিকা চাকমা, সিরাত জাহান স্বপ্না ও ঋতুপর্ণা চাকমা। চলতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অপধিনায়ক সাবিনা খাতুনই প্রথম হ্যাটট্রিক করলেন।
ম্যাচের প্রথমার্ধ্বেই পাকিস্তানের জালে চার গোল দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের মাত্র তিন মিনিটেই সাবিনার ব্যাক পাস থেকে মনিকা চাকমার দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে প্রথম গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের শুরু থেকেই পাকিস্তান রক্ষণে আছড়ে পড়ে সাবিনা-মনিকাদের আক্রমণের ঢেউ। তবে দ্বিতীয় গোল পেতে কিছুটা অপেক্ষায় করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। মাঝমাঠে মারিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে স্বপ্নার দিকে বল বাড়ান সাবিনা। সেই বল প্রতিপক্ষের জালে পাঠাতে একটুও ভুল করেননি স্বপ্না।
এরপরের গোলের জন্য অবশ্য আর অপেক্ষায় থাকতে হয়নি লাল-সবুজের জার্সিধারীদের। দুই অ্যাসিস্টের পর এবার নিজের গোলের খাতা খোলেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। ম্যাচের ৩১ মিনিটে মনিকা চাকমার পাস থেকে আলতো শটে পাকিস্তানের জালে বল জড়ান অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। ঠিক চার মিনিট পর সাবিনা পেয়ে যান নিজের দ্বিতীয় গোল।
৪-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। মেয়েরা কিছু গোলের সুযোগ মিস না করলে অবশ্য ব্যবধান বাড়তে পারতো আরও। বিরতির আগে যেখানে থেমেছিলো, বিরতির পর যেন ঠিক সেখান থেকেই শুরু করে সাবিনা-সানজিদারা।
দ্বিতীয়ার্ধের ১৩ মিনিটেই নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সাবিনা। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে লাফিয়ে হেড করে পাকিস্তানের জালে বল জড়িয়ে নিজের হ্যাটট্রিকের সঙ্গে দলকে ৫-০ গোলের লিড এনে দেন অধিনায়ক।
দ্বিতীয়ার্ধ্বেও আক্রমণের প্রবল ধারা ধরে রাখে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেয়া ঋতুপর্ণা চাকমার জোরালো শট পাকিস্তানের জালে জড়ালে ৬-০ গোলের লিড পায় বাংলাদেশ। বাকি সময়টা ক্রমাগত আক্রমণ করেও অবশ্য আর কোন গোল আদাতয় করতে পারেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
৬-০ গোলের বিশাল জয়ে সেমিফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। দিনের পরের ম্যাচে ভারত-মালদ্বীপ লড়াইয়ে ভারতের মেয়েরা জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে সাবিনাদের।