রাজস্ব আহরণ ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে স্থানীয় সরকারের ঢালাও সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সবশেষে আমার অতিপ্রিয় বিষয়–উচ্চতর প্রবৃদ্ধি নিয়ে কিছু কথা না বলে পারছি না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের নিয়মিতভাবে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে নেওয়া যাবে। কিন্তু সে জন্য প্রয়োজন ক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতিসংক্রমণ। সেজন্য স্থানীয় সরকারের ঢালাও সংস্কার প্রয়োজন। সে প্রয়োজনটি সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে বিবৃত আছে। এ ধারামতো শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সাধন করতে হলে আমাদের ৬৪টি জেলা ও ৯টি মহানগরে স্বশাসিত ও সয়ম্ভর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকারগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব আমলাতন্ত্র বহাল করতে হবে। তাদের দায়িত্ব ও কার্যাবলীর তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। যার একটি দায়িত্বের তালিকায় নির্দিষ্ট করতে হবে। কতিপয় বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও জেলা সরকারের যৌথ দায়িত্ব এবং সেটি সমন্বয়ের প্রক্রিয়া। এ কাজটি করতে পারলে অতি সহজেই জেলা সরকারের গঠন প্রক্রিয়া স্থির করা যাবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারপর যে কাজটি হবে কঠিন ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাহলো কেন্দ্রীয় ও জেলা সরকারের মধ্যে রাজস্ব আদায় ও বণ্টন বিষয়ে নীতি নির্ধারণ। আমার বিবেচনায় রাজস্ব আদায়ের প্রধান দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারেরই থাকবে। জেলা সরকার খানাভিত্তিক সম্পদ করে এবং নির্দিষ্ট সেবার জন্য সেসব আদায় করবে। মোট জাতীয় বাজেটের মোটামুটি ষাটোর্ধ্ব শতাংশ ব্যয়ের দায়িত্ব হবে জেলা সরকারের। এ ব্যবস্থাটি আগামী নির্বাচনের পর পরই বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে এবং নির্বাচনি ইশতেহারে বিভিন্ন দলকে এ বিষয়ে তাদের ধারণা ও কার্যক্রম প্রকাশ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন,‘আমাদের বুঝতে হবে যে, জনসংখ্যায় ও এলাকায় আমাদের এক একটি জেলা পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশের চেয়ে বড়। তাদের সেবা প্রদান ও উন্নয়ন উদ্যোগ সর্বোত্তম হতে হলে কোনও মতেই সক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতিসংক্রমণ বা বিকেন্দ্রায়ন ছাড়া হতে পারবে না। আমি জানি না, কতদিনে আমার এ আশা বাস্তব রূপ লাভ করবে। কিন্তু প্রায় দুই দশক ধরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেভাবে হচ্ছে, সেক্ষেত্রে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা এখন প্রস্তুত এবং সেটি করতে হলে শাসন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবেই হবে।’