আমরা সাধারণত মন ভালো রাখতে বিনোদনের জন্যই গান শুনি। কিন্তু আধুনিক গবেষণা বলছে শাস্ত্রীয় সংগীত শ্রবণ করলে উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস পায়।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় ষাট জন ব্যক্তিকে পঁচিশ মিনিট ব্যাপি অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত সুরকার ভোল্ফ গাংক্ আমাডেয়ুস মোৎসার্ট, জোহান স্ট্রস অথবা সুইডেনের পপ সঙ্গীত ব্যান্ড অ্যাবা এর গান শোনানো হয়। আর অন্য ষাট জন ব্যাক্তিকে নীরবতার মধ্যে রাখা হয়। পরে পর্যবেক্ষণে দেখাযায় যাদেরকে ভোল্ফগাংক্ আমাডেয়ুস মোৎসার্টের শাস্ত্রীয় সংগীত শোনানো হয়েছে তাদের হৃদ-সংকোচন বা সিস্টোলিক রক্ত চাপ (রক্তনালীতে চাপ) কমেছে ৪ দশমিক ৭ মিলিমিটার পারদ, যাদেরকে জোহান স্ট্রসের গান শোনানো হয়েছে তাদের কমেছে ৩ দশমিক ৭ মিলিমিটার পারদ, আর যাদের সুইডেনের পপ সঙ্গীত ব্যান্ড অ্যাবা এর গান শোনানো হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কোনও দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
এদিকে মোৎসার্টের শাস্ত্রীয় সংগীত হৃদ-প্রসারণ বা ডায়াস্টলিক চাপ কমিয়েছে ২ দশমিক ১ মিলিমিটার পারদ, জোহান স্ট্রসের গান কমিয়েছে ২ দশমিক ৯ মিলিমিটার পারদ।
যাদের নীরবতার মধ্যে রাখা হয়েছিল তাদেরও রক্তচাপ কমেছে কিন্তু মোৎসার্ট এবং জোহান স্ট্রসের সঙ্গীত শ্রোতাদের থেকে কম কমেছে। মোৎসার্ট এবং স্ট্রসের সঙ্গীত মহিলাদের থেকে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি রক্তচাপ কমিয়েছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
দীর্ঘ শতাব্দী থেকেই এটা জানা যে মানুষের উপর সংগীতের একটি প্রভাব রয়েছে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে শাস্ত্রীয় সংগীত শুনলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ কম্পন কমে যায় যা মোৎসার্ট এবং স্ট্রসের গানে স্পষ্টত পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু মোৎসার্টের শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রভাব অনেক বেশি শক্তিশালী।
জার্মানির বকুম নগরীতে অবস্থিত রুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন গবেষক হান্সজোয়াচিম ট্রাপ্পে এবং গ্যাব্রিয়েলে ভল্ট এই গবেষণা করেন। ডয়চেস আর্জটেব্লাট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে দাবি করাহয়েছে যে ধীর লয়, দীর্ঘ সুর ও অপরিবর্তিত গতির স্নিগ্ধ গান হৃদরক্তসঞ্চলনের ক্ষেত্রে উপকারী।
এদিকে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরে অনুষ্ঠিত ব্রিটিশ কার্ডিওভাসকুলার সোসাইটির এক সম্মেলনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কর্তৃক উপস্থাপিত গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ইতালির অপেরা সুরকার জুসেপ্পে ভের্দি রচিত শাস্ত্রীয় সংগীত ভাপেন্সিয়েরো, গাইকোমো পুচিনি রচিত নেশুনডরমাএবং বিখ্যাত জার্মান সুরকার লুডভিগ ফান বেটোফেন রচিত ধীর তালের ৯ম সুর ১০ সেকেন্ড এবং পুনরাবৃত্তি করে শুনলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ কম্পন কমে যায়।
সূত্র: ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন, টাইমস নাও নিউজ।